জে এল নং কি? কিভাবে জে এল বা মৌজা নং বের করবেন

“জমি জমার জ্ঞান হচ্ছে পৃথিবীর সমস্থ জ্ঞানের অর্ধেক জ্ঞান” বলে সমাজে একটি হাদিস প্রচলিত রয়েছে। যদিও হাদিসটি যঈফ। তবুও সমাজের এই কথাটির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কারন জমি জমার কথা উঠলেও আমারা অনেক শিক্ষিত লোকেরাও অজ্ঞ হয়ে যাই। আর এই মূল কারন হলো জমি জমা সম্পর্কে আমাদের সঠিক জ্ঞান না থাকা। আর সে জন্যই হয়ত জমি জমার জ্ঞানকে পৃথিবীর সমস্থ জ্ঞানের অর্ধেক বলে সমাজে প্রতিষ্ঠত করা হয়েছে। আর এই কথাটিকে অনেকের কাছে ১০০% সঠিক বলেও মনে হতে পারে। কারন জমি জমার প্রশ্ন উঠলেই আমাদের সামনে কিছু কিছু শব্দ চলে আসে যার অর্থ আমরা অনেকেই জানি না। যেমন : খতিয়ান, পর্চা, দাগ নাম্বার, জে এল নং, তৌজি নং, মৌজা ইত্যাদি। এই আলোচনায় আমরা জে এল নং কি? কিভাবে জে এল বা মৌজা নং বের করবেন তা নিয়েই আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

আরও পড়ুন :কিভাবে নিজের পোস্ট কোড বের করবেন

জে এল নং কি?

জে,এল, নম্বর যার পূর্ন রূপ হচ্ছে Jurisdiction List No। প্রশাসনিক কাজে সুবিধার জন্য সমগ্র বাংলাদেশকে ৮ টি বিভাগ, ৬৪ টি জেলা, ৪৯৫ টি উপজেলা এবং ৪৫৫৪ টি ইউনিয়নে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন আবার অনেক গুলো গ্রামে বিভক্ত। এইভাবে প্রতিটি জেলার নির্দিষ্ট থানা বা উপজেলার আওতাভুক্ত মৌজা বা গ্রাম গুলোকে পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট ক্রমিক নাম্বার দিয়ে সাজানো হয়। এই নির্দিষ্ট ক্রমিক নাম্বার গুলোকেই জে এল নাম্বার বা মৌজা নাম্বার বলে।

কিভাবে জে এল বা মৌজা নং বের করবেন:

বিশেষ করে জমি ক্রয় বিক্রয়, জমির দলিল সম্পাদন, জমির মালিকানা যাচাই সহ বিভিন্ন কাজে জে এল বা মৌজা নং এর প্রয়োজন হয়। তবে জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় আমরা যে মৌজায় বাস করি সে মৌজার নাম্বার বা জে এল নাম্বারই জানি না। যার ফলে নতুন জমি ক্রয় বা জমির মালিকানা যাচাই করতে গিয়ে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ি। যদিও বর্তমানে ভুমি মন্ত্রনালয় ডিজিটালাইজেশনের ফলে, খুব সহজেই জমির মালিকের নাম, খতিয়ান নাম্বার এবং দাগ নম্বর দিয়ে জমির মালিকানা যাচাই করা যায়।

তবে তার জন্য অবশ্যই মৌজা নাম বা নাম্বার জানা আবশ্যক। এই অংশে আমরা কিভাবে মৌজা নং বের করবেন সেটাই দেখানোর চেষ্টা করব।

মৌজা নং বের করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে eporcha.gov.bd সাইটে প্রবেশ করতে হবে।

এরপর বিভাগ অংশ থেকে আপনার বিভাগ, জেলা অংশ থেকে আপনার জেলা, উপজেলা অংশ থেকে আপনার উপজেলা এবং খতিয়ানের ধরন অংশ থেকে বি আর এস বা আর এস নির্বাচন করতে হবে।

খতিয়ানের ধরন নির্বাচন করা হয়ে গেলে মৌজা ঘরে আপনার উপজেলার আওতাভুক্ত সকল মৌজা ক্রমিক নম্বর সহ প্রদর্শিত হবে। মৌজার ঘরে মৌজার নামের পাশে যে ক্রমিক নাম্বার প্রদর্শিত হবে সেটিই মূলত উক্ত মৌজার জে এল নাম্বার বা মৌজা নাম্বার।

 

এই মৌজা অংশ থেকে স্ক্রোলিং করে আপনি যে এলাকায় বাস করেন তার মৌজা নাম্বার দেখে নিতে পারবেন। অথবা উপরের অনুসন্ধান বক্সে আপনার গ্রাম বা এলাকার নাম লিখেও জে এল নাম্বার বা মৌজা নাম্বার দেখে নিতে পারবেন।

শেষ কথা :

মৌজা নাম্বার বা জে এল নাম্বার জমি জমার বিষয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। তাই নতুন জমি ক্রয় করার চিন্তা করলে বা জমির মালিকানা যাচাই করতে চাইলে এই নাম্বার জেনে রাখা খুবই প্রয়োজন। অন্যথায় এই সামান্য বিষয়ের জন্যও অন্যের দারস্থ হওয়া লাগতে পারে। তাই প্রত্যেকের উচিত নিজের মৌজা নাম্বার বা জে এল নাম্বার জেনে রাখা। আশা করি এই আলোচনায় জে এল নং কি? কিভাবে জে এল বা মৌজা নং বের করবেন তা সম্পর্কে আপনি স্পষ্ট ধারনা দিতে সক্ষম হয়েছি। এই রকম আরও গুরুত্বপূর্ন এবং দরকারী পোষ্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।